রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৩

নারী সমাবেশে অংশ নিচ্ছে লাখো পোশাকশ্রমিক

নিউজডেস্ক : হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবির প্রতিবাদে ২৭ এপ্রিল নারী সমাবেশে অংশ নেবেন লাখো নারী গার্মেন্টসকর্মী। গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠন সূত্রে জানা যায়, ২৭ এপ্রিল নারী সমাবেশে লক্ষাধিক নারী কর্মী অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ১৬ এপ্রিল থেকে গার্মেন্টস কারখানা অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে শুরু করা হয়েছে লিফলেট বিতরণ।
সচেতন করা হচ্ছে নারীদের অধিকার সম্পর্কে। ২৭  এপ্রিল গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে যদি নারীদের ছুটি না দেওয়া হয় তাহলে তা উপেক্ষা করেই নারীরা রাজপথে তাদের দাবি আদায়ে নেমে আসবে বলে জনিয়েছেন স্বাধীন বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি শামীমা নাসরিন। তিনি বলেন, “এদেশের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে পোশাকশিল্প ও তার আনুষঙ্গিক শিল্পগুলোর ওপর। পোশাকশিল্পের সাথে জড়িত ৪০ লাখ কর্মীর মধ্যে ৮০ ভাগই নারী। আর হেফাজতের দাবি মেনে নিলে এসব নারীরা অসহায় হয়ে পড়বে।” হেফাজতের দাবি কিছুতেই বাস্তবায়ন হতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন শামীমা নাসরিন। পোশাকশিল্পের নারী কর্মীদের সমাবেশে অংশগ্রহণ সম্পর্কে মালিকপক্ষ কোনো মন্তব্য করতে চান না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। এ বিষয়ে বিজিএমইএর সহ-সভাপতি  মো: শহীদুল্লাহ আজীম বলেন, “আমরা বিজনেস ওয়ারগানাইজেশন। পলিটিক্যাল বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। নারী সমাবেশে আমরা কর্মীদের যেতেও বলব না আবার কেউ যেতে চাইলে তাদের বাধাও দেব না। এটা কর্মীদের ব্যাপার। তবে তারা ব্যক্তিগত ছুটি চাইলে তা বিবেচনা করা হবে।” বিজিএমইএ এর এমন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে শামীমা নাসরিন বলেন, “নারী শ্রমিকরা আন্দোলনে যেহেতু নেমেছে সমাবেশ সফল করবেই। এতে মালিকরা তাদের সঙ্গে থাকলে ভালো, না থাকলেও কিছু বলার নেই।” নারী সমাবেশে নারী গার্মেন্টসকর্মীদের অংশ নেওয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন নারী নেত্রী ও ‘নিজেরা করি’ এর সমন্বয়কারী খুশী কবির। তিনি বলেন, “আমারে দেশের তৃণমূল পর্যায়ের বিশেরভাগ নারীই পোশাক শিল্পের সাথে জড়িত। অর্থনীতিতে তাদের বড় ভূমিকা রয়েছে। শুধু গামেন্টসের নারীরাই কেন আমরা সব পেশাজীবীসহ অন্যদের এই সমাবেশে আহ্বান জানাই।” হেফাজতের ১৩ দফা দাবির মধ্যে ৪ নম্বরে আছে ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্জ্বলনসহ সব বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করা। তবে এ সমাবেশকে পণ্ড করতে হেফাজতে ইসলাম বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করছেন গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনগুলো।  শ্রমিকদের মতে, হেফাজত ইসলামের ফটিকছড়ির তাণ্ডব দেশবাসী দেখেছে। তারা তাদের অযৌক্তি দাবি বাস্তবায়নের জন্য এ সমাবেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করতে পারে। এবার আর বাঙালি নারীরা তা মেনে নেবে না বলে জানিয়েছে স্বাধীন বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশন।