শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৩

মানবমুক্তির চেতনা পরাজিত হতে পারে না: সুলতানা কামাল

আইইবি থেকে: বাংলাদেশ তালেবানি রাষ্ট্র বানানো রুখে দিতে শনিবারের জাতীয় সম্মেলন ডাকা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। শনিবার সকালে ইনস্টিটউশন ইঞ্জিনিয়ার্স অব বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তরান্বিত করাসহ ৫ দফা দাবিতে আয়োজিত জাতীয় সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সুলতানা কামাল বলেন,  “এখন আর ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। এখনই সাম্প্রদায়িক  আক্রমণ রুখে দাঁড়াতে হবে। রুখে দিতে হবে। তা না হলে এই দেশ একদিন তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত হবে।” তিনি বলেন, “মৌলবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। যারা তাদেরকে সমর্থন দিচ্ছে ও যারা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে দোদুল্যমান রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হতে হবে। সব চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিতে হবে। এ জন্য মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন।” সুলতানা কামাল বলেন,  “এ লড়াইয়ে হয়ত কোনো ব্যক্তি পরাজিত হতে পারেন। কিন্তু, চেতনা পরাজিত হতে পারে না। কারণ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে মানবতা ও মানবমুক্তির চেতনা।” অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “রাজনীতি আজ দুভাগে বিভক্ত। একভাগে ক্ষমতার রাজনীতি, অন্যভাগে রয়েছে মুক্তির রাজনীতি।” তিনি বলেন, “ক্ষমতার রাজনীতিকরা নানান অস্ত্র ব্যবহার করে। ধর্মও তাদের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হয়। ক্ষমতার রাজনীতির ওপর আস্থা রাখার কোনো সুযোগ নেই।” তিনি বলেন, “একাত্তরের পরাজিত শক্তি জামায়াত-শিবির এই দেশে থাকার কথা নয়। কিন্তু, মর্মান্তিক সত্য হচ্ছে, তারা আজ এমন দাবি তুলছে, যা পাকিস্তানেও সম্ভব ছিলনা।” “জামায়াত সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভিত গড়েছে। বিদেশে থেকেও তাদের অর্থ আসে। তারা অমানবিক আচরণ করছে” এ জন্য জামায়াতের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার আহ্বান জানান তিনি। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরকে চূড়ান্ত বিজয় মনে করলে ভুল হবে। সংগ্রাম এগিয়ে নিতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করার জন্য।” শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তরান্বিত করাসহ ৫ দফা দাবিতে জাতীয় সম্মেলন শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত আছেন- সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংবাদিক কামাল লোহানী, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এমএম আকাশ, অজয় রায়, রামেন্দ্র মজুমদার, ছায়ানটের সভাপতি ড. সন্‌জিদা খাতুন প্রমুখ। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি জামায়াতের নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, শিল্পী, কবি-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতিরোধের ডাক থেকেই এই সম্মেলন।