শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৩

২ মে ১৮ দলের হরতাল

ঢাকা: আগামী ২ মে সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করবে ১৮ দলীয় জোট। শনিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও ১৮ দলীয় জোটের বৈঠক শেষে জোটের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। এছাড়া ৩০ এপ্রিল সারাদেশে কালো পতাকা উত্তোলন ও ৪ মে ঢাকায় সমাবেশ কর্মসূচিরও ঘোষণা দেওয়া হয়। মতিঝিল শাপলা চত্বরে সমাবেশ করার অনুমতি চাওয়া হবে। যদি অনুমতি না দেওয়া হয় তাহলে বিজয়নগর নাইট অ্যাঙ্গেলের সামনে সমাবেশ করা হবে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খালেদা জিয়া।


বৈঠকে মওদুদ বলেন, সাভারে ভবন ধসের ঘটনায় দায়ীদের অবিলম্বে গ্রেফতার, সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, নেতাকর্মীদের মুক্তি ও তাদের নামে দেওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে। বৈঠক সাভারের ঘটনায় যারা মারা গেছেন তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা ও  পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানানো হয়। 

বৈঠকে সাভারের ঘটনায়  যারা মৃত্যু ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন সরকারকে তাদের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানান এবং প্রত্যেক পরিবারকে ২০ লাখ করে অর্থ সহায়তা করার আহ্বান জানান মওদুদ। তিনি বলেন, এই ট্র্যাজেডি দুর্ঘটনা নয়, এটা হত্যাকাণ্ড। যুব লীগ নেতা সোহেল রানা একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী।  সংসদ সদস্য তৌহিদ জং মুরাদের মদদে বেআইনীভাবে এ ভবন তৈরি করেছে সোহেল রানা। মওদুদ বলেন,  সোহেল রানাকে সংসদ সদস্য তৌহিদ জং মুরাদ পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন বলেও অভিযোগ করেন। ১৮ দল অবিলম্বে মুরাদ জং ও রানাসহ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান।

‌তিনি বলেন, উদ্ধার তৎপরতায় দায়িত্বহীনতা ও অবহেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ১৮ দল। কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে অবিলম্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের অপসারণ দাবি করেছে ১৮ দল। অসহায় মানুষদের উদ্ধারের জন্য বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সেনাবাহিনী, এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ধন্যবাদ জানান বিএনপি।

তিনি বলেন, উদ্ধার তৎপরতায় সরকারের অবহেলা ও সংসদ সদস্য তৌহিদ জং মুরাদ ও রানাকে গ্রেফতার না করার প্রতিবাদে ৩০ তারিখে কালো পতাকা উত্তোলনের জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছে ১৮ দল। মওদুদ বলেন, রানার মতো অনেক সন্ত্রাসী দেশে রয়েছে, ওপর মহলের যোগসাজোসে তারা বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদর  ‍ওপর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। 

জোটের বৈঠকে অংশ নেন এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) আলি আহমেদ, জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল হালিম, বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিভ রহমান পার্থ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ নেজামী ও যুগ্ম-মহাসচিব মুফতি আবুল হাসনাত আমিনী, লেবার পার্টি চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম, এনপিপি চেয়ারম্যান শেখ শওকত হোসেন নীলু, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গাণি, খেলাফত মসলিশের মওল‍ানা মুহাম্মদ এসাহাক প্রমুখ।

এর আগে খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে স্থায়ী  কমিটির বৈঠকে অংশ নেন ড. আর এ গণি, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, এম কে আনোয়ার, ড. ‌আব্দুল মঈন খান, ব্রিগেডিয়ার (অব.) আসম হান্নান শাহ, বেগম সারোয়ারী রহমান প্রমুখ।