ঢাকা: বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা বুধ ও বৃহস্পতিবারের টানা ৩৬ ঘণ্টার হরতালে নাশকতা রোধে পুলিশের পাশাপাশি ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছে বিজিবি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তার জন্য ৪০ প্লাটুনের একটি বিজিবি দল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাজধানী ঢাকার রাজপথে রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের কঠোর অবস্থান দেখা গেছে। পাশাপাশি বেড়েছে পুলিশের টহল। আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তার জন্য ৪০ প্লাটুনের একটি বিজিবি দল মাঠে রয়েছে সন্ধ্যা থেকে। বিজিবির সদস্যরা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, স্থাপনা, কূটনৈতিক এলাকাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন। বিজিবির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, সন্ধ্যা থেকে নেমে সারারাত অবস্থান করে বুধবার সকালে ব্যারাকে ফিরবেন তারা।
যেহেতু টানা ৩৬ ঘণ্টার হরতাল সেহেতু বুধবার সন্ধ্যায় আবার মাঠে নামবেন। হরতালের সমর্থনে মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজধানীতে বাসে আগুন দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি শুরু করেছেন হরতাল সমর্থনকারীরা। সকাল ১১টার দিকে প্রথমে সায়েন্স ল্যাবরেটরির সামনে বাসে আগুন দেন হরতাল সমর্থনকারীরা। এরপর খামারবাড়িতে একটি বাসে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। সেখানে থেকে ৪ জনকে আটকও করা হয়েছে। দুপুর ৩টার দিকে নিউমার্কেট এলাকায় একটি ট্যাক্সিক্যাবে এবং বাংলাবাজার পোস্ট অফিসের সামনে একটি লেগুনায় আগুন দিয়েছেন হরতাল সমর্থকরা। এছাড়া কলাবাগান এলাকায় কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান তারা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩টি গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ২০ জনকে আটকের কথা জানিয়েছে ডিএমপি। রাত পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে আরও নাশকতার আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি সাধারণ মানুষও। গত হরতালে রাজধানী জুড়ে প্রায় ২৫টি যানবাহনে আগুন দিয়েছিলেন হরতাল সমর্থকরা।ডিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আব্দুল জলিল মণ্ডল বলেন, হরতালের নাশকতা ঠেকাতে পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নাশকতা ঠেকাতে পুলিশ মাঠে রয়েছে। তিনি বলেন, চোরাগোপ্তাভাবে দু’একটি জায়গায় আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। তবে সার্বিকভাবে নিরাপত্তায় পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। তেজগাঁও জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির বলেন, এ এলাকায় হরতালের সার্বিক নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। রাজধানীর ভাটারা থানার ওসি সৈয়দ জিয়াউজ্জামান বলেন, বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতাল থাকায় এ থানা এলাকায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। তিনি বলেন, বিশেষ করে কূটনৈতিকপাড়ায় পুলিশের বিশেষ টহল বাড়ানো হয়েছে।
চট্টগ্রামে হরতালে নাশকতা মোকাবেলায় বিজিবি
বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের ডাকা হরতালকে কেন্দ্র করে নাশকতা মোকাবেলায় নগরীতে নেমেছে বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে বিজিবি, পুলিশ ও ৠাব নগরীর বিভিন্ন এলাকায় যৌথভাবে টহল দিচ্ছে। বুধবার ভোর ৬টা থেকে ১৮ দলের ডাকা ৩৬ ঘণ্টার হরতাল শুরু হবে। হরতাল চলাকালে নগরজুড়ে বিজিবি মোতায়েন থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (বিশেষ শাখা) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘হরতাল ডাকলে আগের রাতে এবং হরতাল চলাকালে যে নাশকতা কিংবা আতংক তৈরির চেষ্টা হয়, তা মোকাবেলায় আগেভাগে বিকেল থেকেই বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া হরতালে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে পুলিশকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেল থেকে ৬০ সদস্যের দেড় প্লাটুন বিজিবি সদস্য কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে নগরীতে টহল দেয়া শুরু করেছে। প্রত্যেক ভাগের সঙ্গে এক সেকশন বা ১০ জন করে পুলিশ ও ৠাব সদস্য আছেন। এছাড়া হরতাল শুরুর আগে বুধবার ভোর ৫টা থেকে নগরীর অর্ধশতাধিক পয়েন্টে এক হাজার ৭৬০ জন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।