গণজাগরণ চত্বর থেকে: চট্টগ্রামে গণজাগরণ সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকা থেকে যাচ্ছেন না গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠকরা। মঙ্গলবার রাতে দেড় শতাধিক সংগঠক রওয়ানা দিয়ে বুধবারের পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও সমাবেশকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রশাসনের ১৪৪ ধারা জারি থাকায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত গণজারণ মঞ্চের বৈঠক বিকালে শুরু হলেও এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চলছিলো।
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি এবং জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি শাহবাগের যে আন্দোলন শুরু হয়, তারই অংশ হিসেবে ঢাকার বাইরে প্রথমবারের মতো ১৩ মার্চ চট্টগ্রামে গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশ অনুষ্ঠানের ঘোষনা দেওয়া হয় । গণজারণ সংশ্লিষ্ট একজন নাম না প্রকাশের শর্তে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “ বুধবারের চট্টগ্রামের সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে। তবে মঞ্চের একটি প্রতিনিধিদল বুধবার চট্টগ্রামে যাবে। দলটি মাওলানা আহমেদ শাফির সঙ্গে আলোচনায় বসবে।” তিনি আরো বলেন, “এ বিষয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই শাহবাগ মঞ্চ থেকে একটি বিবৃতি দেবেন মঞ্চের মুখপত্র এবং ব্লগার এন্ড অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্কের আহবায়ক ডা. ইমরান এইচ সরকার। গত ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশ থেকে চট্টগ্রামসহ ঢাকায় আরও কয়েকটি সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়। চট্টগ্রামের সমাবেশ ঢাকা থেকে ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক, বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, স্লোগান একাত্তর, সস্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ অংশ নেওয়ার কথা ছিল। এদিকে চট্টগ্রামের সমাবেশকে কেন্দ্র করে বুধবার সেখানে হরতাল ডেকেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। একই সঙ্গে ভূইফোঁড় এই সংগঠনটি গণজাগরণ মঞ্চের পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশস্থলে পাল্টা সমাবেশ ডাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে সমাবেশস্থলে ১৪৪ ধারা জারি করা হলেও পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার রাতে পুরো নগরীতেই ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। তবে হেফাজতে ইসলাম ও গণজাগরণ মঞ্চ উভয়েই যে কোন মূল্যে সমাবেশ অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়। এ অবস্থায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকায় গণজাগরণ মঞ্চের নেতৃবৃন্দ বৈঠকে বসেন। বৈঠক থেকে বিভাগীয় পর্যায়ের প্রথম এ সমাবেশের মূল কর্মসূচী নির্ধারিত হওয়ার কথা ছিল। এদিকে, চট্টগ্রামে গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশ নিয়ে হেফাজত ইসলাম ও গণজাগরণ মঞ্চের পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচি ঘোষণার পর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে পরপর ৩টি ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটানো হয়। মঙ্গলবার রাত ৮টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে গণজাগরণ মঞ্চের সংবাদ সম্মেলনের ঠিক আগ মুহূর্তে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে। খবর ছড়িয়ে পড়লে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে খন্ড খন্ড মিছিল আসতে থাকে জামাল খান গণজাগরণ মঞ্চ এলাকায়। তারা জামাল খান এলাকায় মিছিল করে শ্লোগান দিতে থাকে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৮টার দিকে একটি লাল পাজেরো গাড়িতে করে এসে পর পর তিনটি ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। ককটেল বিষ্ফোরণের ফলে নগরীর প্রেসক্লাব চত্ত্বরে গণজাগরণ মঞ্চের ব্যানার পুড়ে যায়। ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।