ঢাকা : নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হতে যাচ্ছে মেঘনা ও গোমতী সেতুর মেরামত কাজ। সরকারের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী চলতি বছরের জুনে সেতু দু’টির মেরামত কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর তার আগেই মেরামত কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে। শনিবার মেঘনা ও গোমতী সেতু সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে সাংবাদিকদের এ কথা জানান সেতু মেরামত প্রকল্পের পরিচালক ও ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশনের (পশ্চিম) কর্নেল সাজ্জাদ হোসেন।
এ দু’টি দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেতু, যা বন্দরনগরী চট্টগ্রামকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যুক্ত করেছে। কর্নেল সাজ্জাদ জানান, দীর্ঘদিন অতিরিক্ত ভারি যানবাহন চলার কারণে সেতু দু’টির এক্সপানশন জয়েন্ট ও হিঞ্জ বিয়ারিংগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে সেতু দু’টি যান চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় সেতু দু’টির মেরামত জরুরি হয়ে পড়ে। এরপর গত ৭ মে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সেনাবাহিনীকে অনুরোধ জানায় মেরামতের জন্য। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১০ জুন সেনাবাহিনী মেরামত কাজ শুরু করে। কর্নেল সাজ্জাদ জানান, গাড়ি চলাচলের সময় সেতু দু’টিতে মাত্রাতিরিক্ত কম্পন অনুভূত হতো। এছাড়া মেঘনা নদীতে অতিরিক্ত স্রোত এবং বড় বড় জাহাজ চলাচলের কারণে মেঘনা সেতুর ফাউন্ডেশনের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়। শনিবার ঢাকা থেকে সাংবাদিকদের একটি দল মেঘনা সেতুতে পৌঁছলে কর্নেল সাজ্জাদ সেতু মেরামত কাজের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “মেঘনা সেতুতে ৩৬টি হিঞ্জ বিয়ারিং ও ১৩টি এক্সপানশন জয়েন্ট, গোমতী সেতুতে ৬০টি হিঞ্জ বিয়ারিং ও ১৭টি এক্সপানশন জয়েন্টের স্বল্পকালীন ও স্থায়ী মেরামত এবং মেঘনা নদীর তলদেশের গর্ত হওয়া ঠেকানোর কাজ করছে সেনাবাহিনী। আর এ কাজে সহায়তা করছে মালয়েশিয়ান কোম্পানি হারকিউলেস ইঞ্জিনিয়ারিং।” প্রথম দফা গত বছরের ১ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর প্রতিদিন রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কাজ করে ক্ষতিগ্রস্ত হিঞ্জ বিয়ারিং ও এক্সপানশন জয়েন্টগুলো অস্থায়ীভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে চলতি বছরের ৪ থেকে ৮ জানুয়ারি দুই সেতুর ৬টি এক্সপানশন জয়েন্টের স্থায়ী প্রতিস্থাপনের প্রথম পর্বের কাজ এবং ১৬ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি ১৪টি এক্সপানশন জয়েন্ট ও ২৮টি হিঞ্জ বিয়ারিং প্রতিস্থাপনের দ্বিতীয় পর্বের কাজ শেষ হয়। বর্তমানে ১৫ থেকে ২১ মার্চ মেরামতের তৃতীয় পর্বে ১০টি এক্সপানশন জয়েন্ট ও ৬৮টি হিঞ্জ বিয়ারিং স্থায়ী পরিবর্তনের কাজ চলছে। এই কাজ শেষ হলে সেতু দু’টি ১০ বছরের জন্য ঝুঁকিমুক্ত হবে। এছাড়াও বর্তমানে নদীর পাড় সংরক্ষণের কাজ শেষ হবে আগামী মে মাসে।