ডেস্ক রিপোর্ট : আজ ২৫ বৈশাখ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫২তম জন্মজয়ন্তী। প্রতিবারের ন্যায় এবারও দিনটি পালিত হচ্ছে সাড়ম্বরে। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনটি পালন উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি নিয়েছে। দৈনিক পত্রিকাগুলো বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে, টিভি চ্যানেলগুলো প্রচার করছে বিশেষ অনুষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এ উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ কলকাতার জোরাসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে। বাড়িতে গৃহশিক্ষক রেখেই শুরু হয় তার শিক্ষাজীবন। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লিখে সবাইকে চমকে দেন। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ভান্ডারকে সমৃদ্ধশালী করে গেছেন তার সৃষ্টির দ্বারা।
১৯০১ সালে তিনি শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা করে সেখানে বসবাস শুরু করেন। ১৯১০ সালে তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ গীতাঞ্জলি প্রকাশিত হয়। ১৯১২ সালে প্রকাশিত হয় গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদ। এ কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি ১৯১৩ সালে নোবেল প্রাইজ লাভ করেন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করে। কিন্তু ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে তিনি সে উপাধি প্রত্যাখ্যান করেন।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ কলকাতার জোরাসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে। বাড়িতে গৃহশিক্ষক রেখেই শুরু হয় তার শিক্ষাজীবন। মাত্র আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লিখে সবাইকে চমকে দেন। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ভান্ডারকে সমৃদ্ধশালী করে গেছেন তার সৃষ্টির দ্বারা।
আমাদের জাতীয় জীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রভাব ব্যাপক। তার লেখা গান আমাদের জাতীয় সংগীত। আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির ভান্ডারে এক বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে রবীন্দ্রসৃষ্টি। তার লেখা কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ-নিবন্ধ আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতির ভান্ডারকে করেছে ঐশ্বর্যশালী। তার রচনায় ফুটে উঠেছে শ্বাশত বাংলার প্রতিচ্ছবি। এদেশের মানুষের প্রত্যাহিক জীবনচিত্র তার গল্প-উপন্যাসের প্রধান উপজীব্য। নিপুণ হাতে তিনি এঁকেছেন এদেশের মানুষের জীবনচিত্র। নিজে বিত্তশালী শ্রেণীর প্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও তার লেখায় স্থান পেয়েছে বঞ্চিত মানুষের কথা। কবিতায় তিনি তুলে ধরেছেন প্রাকৃতিক নৈসর্গ, প্রেম আর আধ্যাত্মিক মর্মবাণী। স্রষ্টার সৃষ্টির রহস্য উদঘাটন আর মানুষের প্রতি মানুষের দায়িত্ব কতর্ব্যের কথা তিনি তুলে ধরেছেন তার সাহিত্যকর্মে।
শান্তির প্রবক্তা ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। মানবতা আর বিশ্বশান্তির জন্য আকুতি ফুটে উঠেছে তার রচনায়। শান্তির ললিত বাণী প্রচারের জন্য তিনি হয়েছে সমাদৃত।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টির এক অনন্য সংযোজন। বলা যায়, বাংলা ভাষা সাহিত্যের আজকের যে সমৃদ্ধি তার মূলে রয়েছে রবীন্দ্রসাহিত্য। তিনি বাংলাসাহিত্যে সূচনা করেছিলেন নবধারার, নবযুগের। এজন্যই গবেষকগণ তার সময়কে অভিহিত করেছেন রবীন্দ্রযুগ হিসেবে। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের গোড়াপত্তনই হয়েছিল মূলত তার হাতে। পরবর্তীতে তা শাখা-প্রশাখা বিস্তার করে মহীরুহে পরিণত হয়েছে।
ওপার বাংলার কবি হলেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলাদেশের মানুষের কাছে সমানভাবে সমাদৃত। তিনি আমাদের আত্মার আত্মীয়। তিনি মিশে আছেন আমাদের অন্তরে অস্তিত্বে। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির তিনি অন্যতম প্রাণপুরুষ। আপন সৃষ্টিকর্মের জন্য তিনি এদেশের মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন যুগের পর যুগ।