নিউজডেস্ক : একাত্তরের মানবতাবিরোধী অভিযোগে রাজধানীর নিজ বাড়ি থেকে জামায়াতের সিনিয়র নায়েবে আমির একেএম ইউসুফকে গ্রেফতার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। রোববার দুপুরে তাকে ধানমণ্ডির ১০/এ রোডের ৩৭/এ নম্বর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। ইউসুফ ওই বাড়িতে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন। র্যাব-২-এর অপারেশন অফিসার এএসপি রায়হান বাংলানিউজকে জানান, একেএম ইউসুফকে গ্রেফতার করে শেরেবাংলা নগরে র্যাব-২-এর কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। এখান থেকে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এরপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হবে।
এদিন সকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের এই নেতার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ২৬ মের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ট্রাইব্যুনালে হাজিরেরও নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবিরের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল। এ আদেশ পাওয়ার পর পরই র্যাবের একটি দল ধানমণ্ডিতে ইউসুফের বাড়ি ঘিরে ফেলে। মুক্তিযুদ্ধকালে রাজাকার বাহিনী প্রতিষ্ঠাতা, ডা. মালেক মন্ত্রিসভার সদস্য ইউসুফের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, ধর্মান্তরকরণ, বাড়ি-ঘর ও দোকানে লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ১৫টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগে।
এসব অভিযোগে আনুমানিক আট শতাধিক মানুষকে গণহত্যা, আটজনকে হত্যা, হিন্দু সম্প্রদায়ের আনুমানিক ২০০ জনকে ধর্মান্তরকরণ, আনুমানিক ৩০০ বাড়ি-ঘর লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করা এবং প্রায় ৪০০ দোকান লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগে ধ্বংস করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানি বাহিনীর সকল সহযোগী বাহিনীকে নেতৃত্ব দানের কারণে তিনি অভিযুক্ত হয়েছেন সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটির (উর্ধ্বতন নেতৃত্ব) দায়েও। উল্লেখ্য, এর আগে জামায়াতের সাবেক-বর্তমান ৯ শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতারের পর তাদের চারজনের বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে, বিচার চলছে দুইজনের ও তদন্ত চলছে আরো তিনজনের বিরুদ্ধে। জামায়াতের ১০ম শীর্ষ নেতা হিসেবে যুদ্ধাপরাধের মামলায় অভিযুক্ত ও গ্রেফতার হয়েছেন ইউসুফ। এছাড়া বিচার শেষ হয়েছে সাবেক এক জামায়াত নেতার, বিচার চলছে বিএনপির সাবেক-বর্তমান দুই নেতার আর তদন্তাধীন রয়েছে আরও ছয়জনের মামলা। শেষোক্ত নয়জনের মধ্যে পলাতক একজন আর চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।