নিউজডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া সংলাপ প্রস্তাবকে নাটক বললেন বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া। শনিবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে আয়োজিত ১৮ দলের সমাবেশে দেওয়া প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। খালেদা জিয়া বলেন, “ সাভার ট্র্যাজেডিসহ সব ব্যর্থতা ঢাকতে ডায়ালগের নামে নাটক করছেন। এসব চলবে না। দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। আগে আলোচনার পরিবেশ তৈরি করেন। সংবিধানে সংশোধনীর বিল আনেন। আমরা আলোচনার জন্য প্রস্তুত। আমরাও আলোচনা চাই।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নির্দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। আমরা আপনাদের বলছি, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করুন। দেখুন, ফলাফল কি হয়”। খালেদা জিয়া বলেন, “এখন পর্যন্ত আপনারা আমাদের বহু নেতাকর্মীকে আটক করেছেন। আগে পরিবেশ তৈরি করুন, তারপর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আলোচনা করব। আমি আমার বাড়িতে আপনাকে চায়ের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আসুন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আলোচনা হবে।”
সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের ঘোষণা দিতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিজের বাসায় চায়ের আমন্ত্রণ জানান বিরোধী দলীয় নেতা। সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেন, “৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা না দিলে পরবর্তীতে কোন সভা-সমাবেশ আয়োজনে বিএনপি অনুমতির তোয়াক্কা করবে না। তখন যেখানে জায়গা পাওয়া যাবে সেখানেই বসে যাওয়া হবে।” এর ঠিক আগে আগে সমবেত কর্মীদের কাছে তিনি জানতে চান, “যদি বলি ২৪ ঘণ্টা এখানে বসে থাকেন, আপনারা কি থাকবেন?”
খালেদা জিয়ার এ আহবানের জবাবে সমাবেশ স্থলে উপস্থিত নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে হাত উঁচিয়ে সমস্বরে লাগাতার অবস্থানের পক্ষে তাদের সম্মতির জানান দেন। কর্মীদের এমন সাড়ায় কিছু সময়ের জন্য বক্তব্য থামিয়ে বিরোধী দলীয় নেত্রীকে তৃপ্তির হাসি হাসতে দেখা যায়। তখন খালেদা জিয়া বলেন, “হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি রয়েছে, তাই ৪৮ ঘণ্টা সময় দিলাম।” খালেদা জিয়া ছাড়াও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাদেক হোসেন খোকার সভাপতিত্বে সমাবেশে ১৮ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা বক্তৃতা করেন। সাভারে ভবন ধসে জড়িতদের শাস্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল, সরকারের পদত্যাগ ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে এ সমাবেশ ডাকা হয়। খালেদা জিয়া সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “৪৮ ঘণ্টা পর এমন কর্মসূচি দেওয়া হবে- হয় পালাবেন, না হয় বিদায় নেবেন। অনেক সময় পার হয়েছে, সুস্পষ্ট ঘোষণা দিন। ধানাই পানাই করবেন না।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, “ আপনার বেশভুষার মতো কথারও ঠিক নেই। এখন এক কথা বলেন, আবার সময় গেলে অন্য কথা বলেন। আপনি সৌদিতে গেলে হাতে তসবি নেন ও মাথায় হিজাব পরেন। আবার ভারতে গেলে সিঁদুর ও তিলক পরে আসেন।” তিনি বলেন, “বাগেরহাটে বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে দেশের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাবে। কোন প্রাণি বেঁচে থাকতে পারবে না। সুন্দরবনকে রক্ষার স্বার্থে এই প্রকল্পটি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।এখান থেকে যত না বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হবে।” পরিবেশবাদীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা রাস্তায় নামুন, আপনাদের পাশে আমরা আছি। এই সরকার যেখানে কমিশন দেখে সেখানেই ঝাঁপিয়ে পড়ে। এই সরকার খুনি সরকার। হামলা-মামলার ব্যর্থ সরকার।”