নিউজডেস্ক : ভারতের বিহার ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপের প্রভাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মুষলধারে বৃষ্টি চলছে বুধবার রাত থেকে। এদিকে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় বয়ে যাচ্ছে ঝড়ো হাওয়া । চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মংলা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যšত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এদিকে বুধবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। বৃহস্পতিবার বৌদ্ধ পূর্ণিমার ছুটি থাকায় রাস্তায় জনসমাগম ছিল তুলনামূলকভাবে কম। তারপরও যারাই রাস্তায় বেরিয়েছেন, প্রবল বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতায় নাকাল হতে হয়েছে তাদের।
মিরপুর, শ্যাওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর, গুলশান-১, মালিবাগ, রাজারবাগ, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কে পানি জমে যান চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। সিএনজিচালিত বেশ কিছু যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে আটকে থাকতে দেখা গেছে বিভিন্ন রাস্তায়। ফলে কোনো কোনো এলাকায় হালকা যানজটও সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ৯টা পর্যন্ত ঢাকায় ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই সময়ে দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় টাংগাইলে, ৭৮ মিলিমিটার। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শাহ আলম বলেন, “এখন যে বৃষ্টি হচ্ছে তা কালবৈশাখীর প্রভাবে বৃষ্টি। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে বর্ষা (৭ জুন) আসছে। এর আগে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি স্বাভাবিক।” আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, লঘুচাপের প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু এলাকায় দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। শুক্রবারের পর ধীরে ধীরে বৃষ্টি কমে আসতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।জলাবদ্ধ রাস্তায় বিদ্যুতের তারে ছেঁড়া স্পৃষ্ট হয়ে দুই পথচারীর মৃত্যু
জলাবদ্ধ রাস্তায় পড়ে থাকা বিদ্যুতের ছেঁড়া তারে স্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ
হারিয়েছেন দুই ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানীর বংশাল
থানাধীন নয়াবাজার নর্থসাউথ রোড এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সারারাত ধরে হওয়া বৃষ্টি ও দুর্বল ড্রেনেজ
সিস্টেমের কারণে বৃহস্পতিবার সকালে নর্থসাউথ রোডের আল আরাফাহ ব্যাংকের
সামনের রাস্তায় হাঁটু সমান পানি জমে যায়। এ সময় পাশের বিদ্যুতের পোল থেকে
একটি তার ছিঁড়ে রাস্তায় পড়লে ওই স্থানের পানিও বিদ্যুতায়িত হয়। সকাল সাড়ে
নয়টার দিকে দুই পথচারী আওলাদ(৩৫) ও শাহীন (৩২) সেখানে পৌঁছানো মাত্র
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তৎক্ষণিকভাবে মারা যান। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন,
রাস্তায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে থাকলেও এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের
কোনো মাথা ব্যথা ছিলো না। মূলত কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই এ মর্মান্তিক
ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। এ ব্যাপারে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা কুদ্দুস ফকির জানান, স্থানীয়রা ওই দু’জনকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড
মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। দু’জনের লাশই বর্তমানে ওই হাসপাতালের
মর্গে রাখা আছে। নিহত দু’জনই বংশাল এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে,
এর মধ্যে আওলাদের বাড়ি বংশালে এবং শাহীনের বাড়ি পার্শ্ববর্তী মালিটোলায়।