রবিবার, ৫ মে, ২০১৩

সাঁড়াশি অভিযান : মুহূর্তেই ফাঁকা শাপলা চত্বর

ঢাকা: আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মুখে মুহূর্তেই ফাঁকা হয়ে গেল মতিঝিলের শাপলা চত্বর এলাকা। তর্জন-গর্জনই সার হলো হেফাজতের। কয়েক স্তরের মানব ঢাল দিয়ে কথিত ‘নিরাপত্তা ব্যুহ’ তৈরি করেও টিকতে পারলো না শাপলা চত্বরে অবস্থান নেওয়া হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। মূলত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মোকাবেলায় এই ব্যূহ তৈরি করেছিলেন তারা।   কিন্তু রাত আড়াইটায় শুরু হওয়া র‌্যাব-পুলিশি আক্রমণের মুখে মুহূর্তেই ফাঁকা হয়ে যায় শাপলা চত্বর এলাকা।
দুপুর থেকেই শাপলা চত্বরের চারিদিকে লোহার রড, লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান করে রাস্তার আইল্যান্ড ভেঙ্গে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেছিলো হেফাজতের কর্মীরা। সেই সঙ্গে নিজেদের কাছে প্রচুর ইট-পাটকেল সংরক্ষণ করে রাখে তারা।

পুলিশি অভিযানের আগ পর্যন্ত হেফাজতের কর্মীরা জানিয়েছিলো আল্লামা শফীর নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তারা এই এলাকা ছাড়বে না। প্রয়োজনে শহীদ হবে। আর এই নির্দেশনা অনুযায়ীই তারা কয়েকটি নিরাপত্তা স্তর নির্মাণ করে। প্রথম স্তরে ছিল যারা শহীদ হতে চায়। পুলিশ যদি হামলা চালায় এই স্তরের কর্মীরা জীবন দিয়ে তাদের প্রতিহত করবে। এরা হেফাজতের সবচেয়ে দৃঢ়চেতা কর্মীর দল। এরপরের স্তরে রাখা ছিল সমর্থকদের। দ্বিতীয় স্তরে থাকবে এরা। আর এরপরের স্তরে ছিল সাধারণ কর্মীরা। এভাবে রচিত হয়েছিল হেফাজতের শাপলা চত্বরের নিরাপত্তা ব্যূহ।

এর আগে র‌্যাবের গোয়েন্দা প্রধান লে. কর্নেল জিয়াউর আহসান হেফাজতের কর্মীদের শাপলা চত্বর ছাড়ার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে হেফাজতের নেতাদের সঙ্গে তার কথাও হয়। মাইকিং সতর্ক কর‍া হয় তাদের। কিন্তু প্রশাসনের আহবানে সাড়া না দিয়ে শাপলায় নিজেদের অবস্থান অনঢ় থাকে হেফাজত কর্মীরা। অবশেষে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা লাঠি চার্জ, টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করতে করতে শাপলা চত্বরের দিকে এগুতে থাকে। নটরডেম কলেজ, দৈনিক বাংলা প্রান্ত সহ মোট ৫ পয়েন্ট থেকে এ অভিযান শুরু করা হয়। অভিযানে অংশ নেয় র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা।

অভিযানের তোপে টিকতে না পেরে আশপাশের অলিতে গলিতে পালাতে শুরু করে হেফাজতের কর্মীরা। বেশিরভাগ কর্মীই ইত্তেফাক মোড় ও বলাকা মোড়ের দিকে পিছু হটে আস্তে আস্তে সরে পড়েন। এ সময় অনেককে আটক করা হয়।