ঢাকা : ২রা ফেব্রুয়ারী : নিউজডেস্ক : বাংলাদেশের মানুষ এদেশের মাটিতে বিদেশি হস্তক্ষেপ চায় না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান। শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হিসেবে দলিতদের নাগরিক অধিকার বাস্তবায়নে আইনি সুরক্ষা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। আইন কমিশন ও মানবাধিকার কমিশন যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে। ড. মিজান বলেন, “আমাদের রাজনীতিবিদরা বিদেশিদের কাছে অনেক ধরনের কথা বলছেন। তারা বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার দাবি জানাচ্ছেন।
হায়রে বাংলাদেশের রাজনীতি। আমাদের রাজনীতিবিদদের ক্ষমতা প্রেম আছে, তবে মানবিক ও দেশপ্রেম নেই।” রাজনীতিবিদরা দলিত সম্প্রদায়ের কথা না বলে ক্ষমতাবানদের কথা বলেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, “হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) ট্রাইব্যুনাল নিয়ে যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিচার প্রক্রিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। আমার জানা মতে, পৃথিবীর কোথাও এতো নমনীয় ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হয়নি। তাই আমরা এ ধরনের প্রতিবেদন ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি।” সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হিসেবে দলিতদের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে আইন সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক দেশে প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আইনি দুর্বলতাগুলো তালিকাভুক্ত করে তা দূর করা দরকার।” তিনি বলেন, “দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ সমাজের অধিকাংশ মানুষ নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন নন। প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে তাদের সচেতন করে তুলতে হবে।” আইন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম শাহ্ আলমের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইন কমিশনের সিনিয়র গবেষণা কর্মকর্তা শারমিন নিগার। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন আইন কমিশনের সাধারণ সম্পাদক হাসিনা রওশন জাহান। সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম আলোচনায় অংশ নেন।উল্লেখ্য, শুক্রবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচের(এইচআরডব্রিউ) প্রকাশিত বৈশ্বিক প্রতিবেদন-২০১৩ তে বলা হয়, বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সরকার রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের কার্যক্ষেত্র সংকীর্ণ করেছে। বিভিন্ন সময় আইন লঙ্ঘন করা সত্ত্বেও নিরাপত্তাবাহিনীকে আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি করেনি এবং বিভিন্ন গুম ও হত্যার তদন্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া বিডিআর বিদ্রোহ ও যুদ্ধাপরাধের বিচারে নিরপেক্ষতার প্রশ্নও তোলা হয়েছে প্রতিবেদনে।