গণজারণ চত্ত্বর: এ এক প্রতিবাদী নিরবতা। নিরবতা যে কত বড় শক্তি তা দেখলো বাংলাদেশ, দেখলো বিশ্ব। মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে তিন মিনিটের জন্য স্তদ্ধ হয়ে গেল শাহবাগ ও এর আশপাশের এলাকা। গোটা দেশেই নেমে এসেছিলো এই নিস্তব্ধতা। শাহবাগের মঞ্চে নিরবতায় ছিলেন ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানম, সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার প্রমুখ।
এদিকে ১৪ দল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কর্মুসচি পালন করে। মন্ত্রী পরিষদের সদস্যরা সচিবালয়ে, সংসদ সদস্যরা সংসদ চত্বরে, গার্মেন্টস শ্রমিক ও পরিবহন শ্রমিকরা, শিক্ষার্থীরা ক্লাস থেকে বেরিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে এই অভিনব কমর্সূচি নেয় শাহবাগের গণজাগরণ চত্বরে আন্দোলনকারীরা। কর্মসূচি অনুযায়ী বিকেল চারটায় একযোগে সারাদেশের মানুষ তিন মিনিটের জন্য জেগে ওঠে। ‘যে যেখানে যে অবস্থায় থাকুন না কেন বিকেল চারটায় তিন মিনিটের জন্য সব কাজ ফেলে দাঁড়িয়ে যান। আন্দোলনকারীরা সোমবার বিকেলে এভাবে সারাদেশের মানুষের প্রতি এই কমর্সূচি পালনের আহবান জানান। ব্যাংক, বীমা, সরকারি অফিস, আদালত, পোশাক কারখানাসহ যে যেখানে কর্রত যেখানেই কর্রত রয়েছেন সেখানেই যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে দাঁড়িয়ে যান। যারা রাস্তায় ছিলেন, তারা সেখানেই পথ চলা থামিয়ে দিয়ে ও্খানেই দাঁড়িয়ে যান। আর এভাবে তিন মিনিটের জন্য স্তদ্ধ হয়ে যায় পুরো দেশ। তিন মিনিটের জন্য জেগে ওঠে দেশের কোটি কোটি মানুষ। জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে স্টাফ করেসপন্ডেন্ট সাজেদা সুইটি জানান, নিরবতা শেষে হাত উচিয়ে কর্মসূচি পালন শেষে জয়বাংলা শ্লোগান দেন। এই কর্মসূচ থেকে বাদ যায়নি রাস্তার দোকানী ও ছোট শিশুরাও। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অ্যধাপক প্রাণ গোপাল দত্তের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কমর্কর্তা, কর্মচারীরা ডি ব্লকের সামনে কর্মসূচিতে অংশ নেন। বারডেম হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ড. আজাদ চৌধুীরর নেতৃত্বে হাসপাতালের সামনে চিকিৎসক, কমর্কর্তা, কর্মচারীদের নিয়ে কর্মসূচি পালন করেন। চারুকলার অনুষদের সামনে কয়েক হাজার মানুষ তিন মিনিট নিরবতা পালন করে। টিএসসি এলাকায় রিকশা প্রাইভেট কারসহ সব যানবাহন থমকে যায়।ছাত্রজনতার শ্লোগান মিছিল থেমে যায়। বইমেলায় আগত পাঠক, লেখক, প্রকাশকরা ও একাডেমীর কর্মকর্তা কর্মচারীরা কর্মসূচিতে অংশ নেয়। মঙ্গলবার সকাল থেকেই থেমে থেমে গণজাগরণ মঞ্চ থেকে বারবার এই কর্মসূচি সফল করার আহবান জানানো হয়।