বুধবার, ৫ জুন, ২০১৩

মুজাহিদের রায় যে কোনো দিন

নিউজডেস্ক : একাত্তরে জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের যুদ্ধাপরাধের মামলার রায় হবে যে কোনো দিন। হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও দেশত্যাগে বাধ্য করার মতো সাতটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযাগ রয়েছে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদের বিরুদ্ধে। বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। আসামিপক্ষের বক্তব্যের  জবাবে পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-২ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখে।
এখন যে কোনো দিন এ মামলার রায় দিতে পারে ট্রাইব্যুনাল। এর আগে মঙ্গলবার মুজাহিদের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক। প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “আলী আহসান মুজাহিদের বিরুদ্ধে আনা সাতটি মানবতাবিরোধী ঘটনার ৩৪টি অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছি বলেই আমরা মনে করি।আশা করছি তার সর্ব্বোচ্চ শাস্তি হবে।”

গত বছরের ২৬ অগাস্ট শাহরিয়ার কবিরের জবানবন্দি উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাকসহ প্রসিকিউশনের পক্ষে মোট ১৭ জন সাক্ষ্য দেন। অন্যদিকে মুজাহিদের পক্ষে সাক্ষ্য দেন কেবল তার ছোট ছেলে আলী আহমাদ মাবরুর। প্রসিকিউশনের অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র শাখা ইসলামী ছাত্রসংঘের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকা মুজাহিদ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী আল বদর বাহিনীর দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ইসলামী ছাত্রসংঘের সদস্যদের নিয়ে ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্নস্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনের অভিযোগও আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। ২০১০ সালের জুন মাসে গ্রেপ্তার হন জামায়াতের এ নেতা। গত ২৬ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল-১। এরপর প্রসিকিউশনের আবেদনে মামলাটি দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই গত বছর ২১ জুন যুদ্ধাপরাধের সাত ঘটনায় অভিযোগ গঠন করে মুজাহিদের বিচার শুরু হয়।  এর আগে যুদ্ধাপরাধের চারটি মামলার রায় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে প্রথম রায়ে জামায়াতের সাবেক রুকন আবুল কালাম আযাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশ আসে। দ্বিতীয় রায়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন এবং তৃতীয় রায়ে দলটির নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।  আর চতুর্থ রায়ে গত ৯ মে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ফাঁসির আদেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে জামায়াতের সাবেক আমীর গোলাম আযমের যুদ্ধাপরাধের মামলাও রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়েছে।