নিউজডেস্ক : দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান গোলাম রহমানের পদের মেয়াদ অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও কোন কর্তৃত্ব বলে পদে বহাল আছেন তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। আদালত চলতি বছরের ২ মের পর থেকে তার সব কর্মকাণ্ড কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং এ সময়ে নেওয়া বেতন-ভাতা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত দেওয়ার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন।
আগামী বৃহস্পতিবার ১৩ জুনের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে দুদক চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়ে ওই দিন পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল। দুদক চেয়ারম্যানের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। রিটের অন্য বিবাদীরা হচ্ছেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব ও দুদক সচিব। আদেশের পরে বদরুদ্দোজা বাদল সাংবদিকদের বলেন, ২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিলের গেজেট অনুযায়ী দুদক চেয়ারম্যানের মেয়াদ ১ মে’২০১৩ পর্যন্ত। কিন্তু তিনি এখনও কিভাবে আছেন তা জানতে চেয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু তিনি নোটিশের জবাব না দেওয়া রিট দায়ের করা হয়। আর আদালত রুল জারি করেছেন।প্রসঙ্গত, আইনি নোটিশের জবাব না দেওয়ায় দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমানের পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রোববার রিটটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মির্জা আল মাহমুদ। রিটে আইন অনুযায়ী গত ২ মে পদের মেয়াদ অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও কোন কর্তৃত্ব বলে পদে বহাল আছেন এবং এ সময়ে তার সকল কর্মকাণ্ড কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এবং এ সময়ে নেওয়া বেতন-ভাতা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত দেওয়ার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়। এর আগে গত বুধবার মেয়াদ শেষ হয়েছে বলে দাবি করে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান কোন কর্তৃত্ব বলে পদে আছেন তার জবাব চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ দেন ওই আইনজীবী মির্জা আল মাহমুদ। নোটিশ পাওয়ার দুই দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ না করলে এবং জবাব না দিলে দুদক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি। নোটিশ পাঠানোর পর বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা আল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, “২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিল গোলাম রহমানকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেয় সরকার। দুদক আইনে আছে, নিয়োগের তারিখ থেকে এটি কার্যকর হবে। সে হিসেবে তার মেয়াদ ছিল ১ মে পর্যন্ত। কিন্তু তিনি কোন কর্তৃত্ব বলে বিধিবদ্ধ কার্যকাল শেষ হওয়ার পরও ওই পদে বহাল রয়েছেন এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তার সকল কার্যক্রম কেন অবৈধ হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় নোটিশে।” দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ৬ (৩) ধারায় বলা হয়েছে-‘কমিশনারগণ, ধারা ১০ এর বিধান সাপেক্ষে, তাহাদের নিয়োগের তারিখ হইতে চার বৎসর মেয়াদের জন্য স্ব স্ব পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন।’ জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২ এপ্রিল তৎকালীন চেয়ারম্যান সাবেক সেনাপ্রধান ও জরুরি সরকারের পূর্ববর্তী সময়ের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) হাসান মশহুদ চৌধুরী ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করলে দুদক চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছর ৩০ এপ্রিল সরকারের সাবেক সচিব গোলাম রহমানকে নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। তবে তিনি যোগদান করেন ২৪ জুন।